পদ্মা সেতুতে রোববার (২৫ অক্টোবর) বসানো হলো ৩৪তম স্প্যান। ফলে দৃশ্যমান হলো পুরো সেতুর ৫ কিলোমিটারের বেশি অংশ। এর আগে শনিবার (২৪ অক্টোবর) দিনভর চেষ্টার পর তীব্র বাতাস ও আলোস্বল্পতায় পদ্মা সেতুর ৩৪তম স্প্যান বসানোর কাজ স্থগিত রাখা হয়।
এর আগে শনিবার ৩৪তম স্প্যানটি বসানোর পরিকল্পনা করা হলেও দিনভর চেষ্টা করাও বৈরি আবহওয়ার কারণে স্প্যানটি বসানো যায়নি।
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়া মো, আব্দুল কাদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। তিনি জানান, শনিবার বিকালে কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে মডিউল নং ২এর স্প্যানটি ভাসমান ক্রেনের সাহায্য নির্ধারিত পিয়ারের কাছে নোঙর করে রাখা হয়। তবে বৈরি আবহাওয়া ও ঝড়ো বাতাসের কারণে পরবর্তীতে কারণে স্প্যানটি উপরে তোলা যায়নি। রবিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ক্রেনটির সাহায্য পুনরায় পজিশন অনুযায়ী ইঞ্চি ইঞ্চি মেপে ধূসর রংয়ের ১৫০মিটার দৈর্ঘ্যের স্প্যানটি তোলার চেষ্টা করা হয়। এতে সময় লাগে কয়েক ঘন্টা। সকাল সোয়া ১০টার দিকে ৭ ও ৮নং পিয়ারের থাকা ভূমিকম্প সহনশীল বিয়ারিংয়ের উপর স্প্যানটি সম্পূর্ণভাবে বসানো হয়।
এদিকে ৩৪তম স্প্যানটি বসে যাওয়ায় সেতুতে বাকি রইলো ৭টি স্প্যান। যেগুলো সবগুলো সেতুর মাওয়া প্রান্তে বসানো হবে। ইতিমধ্যেই জাজিরা প্রান্তে সবগুলো স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। এর আগে গত ১৯অক্টোবর পদ্মা সেতুতে বসানো হয়েছিলো ৩৩তম স্প্যান।
পদ্মা সেতু সূত্রে জানা গেছে, ৩৪তম স্প্যানের পরে আগামী ৩০ অক্টোবর ২ এবং ৩ নম্বর পিয়ারের ওপর ৩৫তম স্প্যান, নভেম্বর মাসের ৪ তারিখ ৩৬তম স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। আর আগামী ১০ডিসেম্বরের মধ্যে সকল স্প্যান বাসানোর নির্দেশনা রয়েছে সেতু সচিবের।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হয় ৩৩টি স্প্যান। এতে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ৪ হাজার ৯শ ৫০মিটার মিটার অংশ।
৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সব কটি পিয়ার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর আগামী ২০২১ সালেই খুলে দেয়া হবে।