করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে বিভিন্ন এলাকাকে জোনভিত্তিক লকডাউন করা শুরু হয়েছে। রেড জোনে থাকা এলাকাকে কঠোরভাবে লকডাউন করা হচ্ছে। তবে রাজশাহী জেলার কোনো এলাকা রেড জোনে নেই। জেলার সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হক মঙ্গলবার (১৬ জুন) সকালে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, কোনো এলাকার প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে যদি ১০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত থাকেন, তাহলে সে এলাকাকে রেড জোন হিসেবে ঘোষণা করা হবে। তবে রাজশাহীর কোথাও সংক্রমণের এমন হার নেই। তাই কোনো এলাকা রেড জোনে পড়েনি। লকডাউনও নেই।
সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, জেলা ও মহানগরে এ পর্যন্ত ১৪৫ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৪৯ জন আক্রান্ত মহানগরীতে। এ শহরে বসবাস করেন প্রায় ৭ লাখ ৩৪ হাজার মানুষ। সে অনুযায়ী, সংক্রমণের হার এখনও রেড জোনের নিচে।
তবে মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক ডা. গোপেন্দ্রনাথ আচার্য্য জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাইডলাইন অনুযায়ী প্রতি ১ লাখে ৩-৯ জন করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেলে ওই এলাকা ইয়েলো জোন হিসেবে গণ্য হবে। এই হিসেব অনুযায়ী রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এলাকা, তানোর ও চারঘাট উপজেলা ইয়েলো জোনের মধ্যে পড়েছে।
জেলার অন্যান্য উপজেলা পড়ছে গ্রীন জোনের মধ্যে। এই তিন এলাকাকে ইয়েলো জোন ও উপজেলার অন্যান্য এলাকাকে গ্রিন জোন চিহ্নিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
রাজশাহী জেলার মধ্যে সর্বোচ্চ ১৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে মোহনপুর উপজেলায়। এছাড়া বাঘায় ১১, চারঘাটে ১৪, পুঠিয়ায় ১১, দুর্গাপুরে ৫, বাগমারায় ১১, তানোরে ১৭, পবায় ৮ এবং গোদাগাড়ীর ১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। জেলা ও মহানগরে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪৪ জন। আর মারা গেছেন ৩ জন। বর্তমানে ৯৮ জন করোনার সঙ্গে লড়াই করছেন।
সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হক বলেন, আগে আক্রান্ত হয়েছেন, পরে সুস্থও হয়েছেন এ রকম উপজেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেশি দেখালেও রেড জোনে পড়বে না। বর্তমানে আক্রান্ত থাকা রোগীর সংখ্যা কত সেটিই বিবেচ্য বিষয়। সে হিসাবে রাজশাহীর প্রায় গোটা এলাকা গ্রিন জোনে রয়েছে। তবে উপজেলা পর্যায়ে দু’একটি এলাকা ইয়েলো জোনে পড়ছে। রোগী কমে সেটি আবার গ্রিনে যাচ্ছে। কখনও কখনও আবারও ইয়েলো জোনে ফিরে যাচ্ছে। তবে রেড জোন হচ্ছে না।
সিভিল সার্জন বলেন, গ্রিন জোনে আছি বলে স্বস্তিতে থাকার কোনো উপায় নেই।
মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। তা না হলে গ্রিন জোন রেড হতে সময় লাগবে না। কারণ, প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে জীবনযাপনের কোনো বিকল্প নেই।